ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু ধেয়ে আসছে প্রবল বেগে।কলেজগ্রুপে যশোবন্তের পোষ্ট পড়ে পঞ্চাশের এপারে ওপারে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। সাত সকালে চাড্ডি খিঁচুড়ি চাপিয়ে দিলুম গরমগরম।
কত্তাকে বললুম আজ বাপু চটপট খেয়ে দুগগা দুগগা ক র।হাওয়ার গতিক মোটেও ভাল নয় শনিবারের বাজার তায় নিম্ন চাপ। মাথা খাও বাড়ি ফিরো কিন্তু তাড়াতাড়ি। আজ তোমার পছন্দের আলুর চপ বানিয়ে রাখব ভাজা মশলা নারকেল কুচি দিয়ে।
আমি চল্লুম সেই ফাঁকে টাইম মেশিনে চেপে সোজা১৯৮৪।কি জানি বাপু আর কিন্তু আমার আমি আর আমাতে রইলুম নিকো।
কত্তাকে বললুম আজ বাপু চটপট খেয়ে দুগগা দুগগা ক র।হাওয়ার গতিক মোটেও ভাল নয় শনিবারের বাজার তায় নিম্ন চাপ। মাথা খাও বাড়ি ফিরো কিন্তু তাড়াতাড়ি। আজ তোমার পছন্দের আলুর চপ বানিয়ে রাখব ভাজা মশলা নারকেল কুচি দিয়ে।
আমি চল্লুম সেই ফাঁকে টাইম মেশিনে চেপে সোজা১৯৮৪।কি জানি বাপু আর কিন্তু আমার আমি আর আমাতে রইলুম নিকো।
পর্ব-২
এই বর্ষাকালটি বাপু বেজায় গোলমেলে। গ্রীষ্ম ছিল দিব্যি ভাল তেএঁটে,তিরিক্ষি। বর্ষার দুচার ফোঁটা পড়লেই
যেন কেম ন কেম ন ক রে ওঠে মন। ভারী দিগদারী ফেরার বাপু।
........................তা অ তীতে ফেরা তো আর সোজা ক থা ন য় হে।পাক্কা ৩২বছ রের এপার ওপার।খোদ জীবনানন্দ ও কুড়ির বেশি টান তে পারেন নি তা আমি তো কোন ছার।
সেইসব ছটফটে কিশোরেরা এখন সব ভারিক্কি চাল,কারো কারো মাথার একঢাল চুল বিলকুল
হাওয়া। সেই সব ছিপছিপে কিশোরীরা এখন সব মেদবতী।তার ওপর তাদের উপরি পাওনা পতিভাগ্যে নামের অর্ধেক ঘাপলা।তাদের সব খুঁজে পেতে জুটিয়ে এনে তবেই না শুরু ক রা।
কলেজ মানে তো আর একা একা ন য় হে। ফেলে আসা অজস্র মুখ,রেখে আসা অসংখ্য স্মৃতি।কি করে যে সব কজনাকে জড়ো ক রব এক সাথে তাই ভাবছি।
যাক ক লেজ ট্যাংকের পাশে সাইকেল স্ট্যান্ডে আমার যাদুযান টি জমা রেখে আমি এখন গাড়িবারান্দা র দিকে এগোচ্ছি।বিজ্ঞানের অশেষ কৃপায় আমি মিষ্টার ইন্ডিয়ার মহিলা সংস্ক রন।আমি সবাই কে দেখছি আমাকে কেউ দেখতে পাচ্ছে না।
গুটি গুটি এগোচ্ছি ইলেভেন সায়েন্সের দিকে।এক টু দেরী হ য়ে গেছে বোধহয়। ক্লাস শুরু হ য়ে গেছে।তা সেই প্রথমদিন সেদিন ও তো তাই হয়েছিল।
আর ক্লাসে ঢুকতেই ছেলেদের রো তে থার্ডবেঞ্চে একজনের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেছিল।আজ ও ম নে আছে তার ঘিয়ে কালারের শার্টের সবুজ বাটন লাইন চেক। একে "লভ এট ফার্স্ট সাইট" ব ল লে বোধহ য় বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে তাই না। তোমরা কি ব লো?
যেন কেম ন কেম ন ক রে ওঠে মন। ভারী দিগদারী ফেরার বাপু।
........................তা অ তীতে ফেরা তো আর সোজা ক থা ন য় হে।পাক্কা ৩২বছ রের এপার ওপার।খোদ জীবনানন্দ ও কুড়ির বেশি টান তে পারেন নি তা আমি তো কোন ছার।
সেইসব ছটফটে কিশোরেরা এখন সব ভারিক্কি চাল,কারো কারো মাথার একঢাল চুল বিলকুল
হাওয়া। সেই সব ছিপছিপে কিশোরীরা এখন সব মেদবতী।তার ওপর তাদের উপরি পাওনা পতিভাগ্যে নামের অর্ধেক ঘাপলা।তাদের সব খুঁজে পেতে জুটিয়ে এনে তবেই না শুরু ক রা।
কলেজ মানে তো আর একা একা ন য় হে। ফেলে আসা অজস্র মুখ,রেখে আসা অসংখ্য স্মৃতি।কি করে যে সব কজনাকে জড়ো ক রব এক সাথে তাই ভাবছি।
যাক ক লেজ ট্যাংকের পাশে সাইকেল স্ট্যান্ডে আমার যাদুযান টি জমা রেখে আমি এখন গাড়িবারান্দা র দিকে এগোচ্ছি।বিজ্ঞানের অশেষ কৃপায় আমি মিষ্টার ইন্ডিয়ার মহিলা সংস্ক রন।আমি সবাই কে দেখছি আমাকে কেউ দেখতে পাচ্ছে না।
গুটি গুটি এগোচ্ছি ইলেভেন সায়েন্সের দিকে।এক টু দেরী হ য়ে গেছে বোধহয়। ক্লাস শুরু হ য়ে গেছে।তা সেই প্রথমদিন সেদিন ও তো তাই হয়েছিল।
আর ক্লাসে ঢুকতেই ছেলেদের রো তে থার্ডবেঞ্চে একজনের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেছিল।আজ ও ম নে আছে তার ঘিয়ে কালারের শার্টের সবুজ বাটন লাইন চেক। একে "লভ এট ফার্স্ট সাইট" ব ল লে বোধহ য় বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে তাই না। তোমরা কি ব লো?
প র্ব-৩
না হে বাপু না।জীবন টা অমন দুয়ে দুয়ে চার নয় হে।এই সবে দুছত্তর লিখেছি কি লিখিনি অমনি সবাই রূপক,সমাস,অব্যয়, সন্ধি কতকিছু কল্পনা করে বসলে।
তোমাদের যাদের "আনন্দলোক"পড়ে সাহিত্য ক্ষুধা মেটানো অভ্যাস তারা মানে মানে পাততাড়ি গোটাও বাপু।এখানে আমি গেঁজানো খেজুররস বেচতে আসিনি,এসেছি জীবনকে খুঁজতে।
হারানো দিন,হারানো মানুষ, হারানো যুগ,হারানো মুল্যবোধের সন্ধানে।
কলেজ মানেই কি শুধু কিশোর ছেলেগুলির প্রতি মোহ।না তা তো নয়।মোহ ক্ষুদ্রতা থেকে বৃহত্তরের,মোহ গন্ডিবদ্ধতা থেকে বন্ধন মুক্তির,মোহ নতুন পৃথিবীর, মোহ নতুন স্বপ্নের।
সে সব যেন এক কল্পলোকের দিন। নিজেকে জানার বা জানানোর,মেলে ধরার,স্বপ্ন দেখার বা দেখানোর।
সেসব দিন আলোকিত হবার,সেসব দিন গুঞ্জরনের,সেসব দিন এগিয়ে যাবার,সেসব দিন ভাসিয়ে দেবার অথবা ভেসে যাবার।
তখন তো সবে কৈশোর। জীবনের সকালবেলা। জীবনের তো তখন সবকিছুই বাকী হে।
সেই তো গড়ার সময়।ক্যারিয়ার, মনস্তত্ব,ভালবাসা, জীবনের দিশা-গতি।
কথায় বলে মহাবিদ্যালয়। জীবন তৈরীর সোপান। সোজা জায়গা তো নয় হে।
কত আশা ভাঙল, কত আশা তৈরী হ ল।
এইখানকার ভুলচুক,আবেগ,শ্রম,সঠিক সিদ্ধান্ত সব নিয়ে তৈরী ইমারত নিয়েই তো আজ আমরা যে যার অবস্থানে দাঁড়িয়ে। তাই নয় কি?
তোমাদের যাদের "আনন্দলোক"পড়ে সাহিত্য ক্ষুধা মেটানো অভ্যাস তারা মানে মানে পাততাড়ি গোটাও বাপু।এখানে আমি গেঁজানো খেজুররস বেচতে আসিনি,এসেছি জীবনকে খুঁজতে।
হারানো দিন,হারানো মানুষ, হারানো যুগ,হারানো মুল্যবোধের সন্ধানে।
কলেজ মানেই কি শুধু কিশোর ছেলেগুলির প্রতি মোহ।না তা তো নয়।মোহ ক্ষুদ্রতা থেকে বৃহত্তরের,মোহ গন্ডিবদ্ধতা থেকে বন্ধন মুক্তির,মোহ নতুন পৃথিবীর, মোহ নতুন স্বপ্নের।
সে সব যেন এক কল্পলোকের দিন। নিজেকে জানার বা জানানোর,মেলে ধরার,স্বপ্ন দেখার বা দেখানোর।
সেসব দিন আলোকিত হবার,সেসব দিন গুঞ্জরনের,সেসব দিন এগিয়ে যাবার,সেসব দিন ভাসিয়ে দেবার অথবা ভেসে যাবার।
তখন তো সবে কৈশোর। জীবনের সকালবেলা। জীবনের তো তখন সবকিছুই বাকী হে।
সেই তো গড়ার সময়।ক্যারিয়ার, মনস্তত্ব,ভালবাসা, জীবনের দিশা-গতি।
কথায় বলে মহাবিদ্যালয়। জীবন তৈরীর সোপান। সোজা জায়গা তো নয় হে।
কত আশা ভাঙল, কত আশা তৈরী হ ল।
এইখানকার ভুলচুক,আবেগ,শ্রম,সঠিক সিদ্ধান্ত সব নিয়ে তৈরী ইমারত নিয়েই তো আজ আমরা যে যার অবস্থানে দাঁড়িয়ে। তাই নয় কি?
প র্ব-৪
সেদিন সকালে ক্লাসে ঢুকে আমরা সবাই হতবাক। ব্লাকবোর্ড এ বড় বড় ক রে লেখা
রোল নাম্বার -৩০ তুমি শুধু আমারই
রোল নাম্বার -৩০ তুমি শুধু আমারই
নতুন ক্লাস কারোর রোল ই কারো ভাল জানা নেই। সবাই মুখ চাওয়া চাওয়ি করে ৩০ কে অনুসন্ধান করছে।যার রোল ৩০ তার তো বুক ধুকপুক। সে আমাদের ই এক বান্ধবী। কিন্তু যিনি লিখলেন তাঁকে তো এবার খুঁজে বার ক রা চাই।
তাই শুরু হয়ে গেল চিরুনিতদন্ত।মেয়েদের ই আগ্রহ বেশি কারন তাদের সম্মানে আঘাত।
কিছু অতি গায়েপড়া ছেলের সাহায্য নেওয়া হল যারা ফ্রি সার্ভিস দিয়ে কেতাত্থ হতে যৎপরোনাস্তি লালায়িত।
তারা প্রানপণ বিভীষণ রূপে অবতীর্ণ হয়ে আসল কাল প্রিটের স্বরূপ ফাঁস করলো।
সেই ল্যাকপেকে সিং চশমা পরা আসামী তখন মদন দেবের অভিশাপে বিস্তর প্যাঁক খেতে লাগল সারাবছর।
তাই বলে কি পরবর্তীকালে বীরপুঙ্গব এর দল স্বীয় প্রেমের প্রকাশে বিরত থেকেছেন।কখনোই নয়। সেকালে নানা নামকরা জুটিরা কলেজের আকাশ- বাতাস-কচি ঘাস-বৃক্ষাবাস মাতিয়েছেন আপন লীলা খেলায়।
তাদের সব নাম এখনো মনের পাতায় তোমার আমার তবে কিনা সেটি বলা বারণ কারন সেটাই কোড অফ ডিসেন্সি বা মোড অফ ফ্রেন্ডশিপ।
আমাদের কালে প্রেমে বিস্তর আবেগ ছিল। কারণ যোগাযোগব্যবস্থা ছিল দূর্বল আর ভাবনার জগৎ ছিল বিশাল। প্রকাশের মাধ্যম ছিল কম। সেই আদি অকৃত্রিম পত্র।
দান প্রতিদান ছিল সামান্য কারন পকেট ছিল গড়ের মাঠ।তবু তার মধ্যেও ছিল ইচ্ছে নদীতে বান।
মনে আছে আমার এক কিশোর বন্ধু পুরী বেড়াতে গিয়ে আমাকে একটি কোনার্কের রথের চাকা এনে দিয়েছিল। বুঝতাম তার কাছে আমি বিশেষ কিন্তু আমি তাকে সেভাবে দেখিনি কোন দিন। সেই বন্ধুটি আজ আর এই পৃথিবীতে নেই কিন্তু তার দেওয়া সেই উপ হার টি আজ ও আমার বাবার বাড়ির সোকেসে সাজান আছে তেমনই।।।
তাই শুরু হয়ে গেল চিরুনিতদন্ত।মেয়েদের ই আগ্রহ বেশি কারন তাদের সম্মানে আঘাত।
কিছু অতি গায়েপড়া ছেলের সাহায্য নেওয়া হল যারা ফ্রি সার্ভিস দিয়ে কেতাত্থ হতে যৎপরোনাস্তি লালায়িত।
তারা প্রানপণ বিভীষণ রূপে অবতীর্ণ হয়ে আসল কাল প্রিটের স্বরূপ ফাঁস করলো।
সেই ল্যাকপেকে সিং চশমা পরা আসামী তখন মদন দেবের অভিশাপে বিস্তর প্যাঁক খেতে লাগল সারাবছর।
তাই বলে কি পরবর্তীকালে বীরপুঙ্গব এর দল স্বীয় প্রেমের প্রকাশে বিরত থেকেছেন।কখনোই নয়। সেকালে নানা নামকরা জুটিরা কলেজের আকাশ- বাতাস-কচি ঘাস-বৃক্ষাবাস মাতিয়েছেন আপন লীলা খেলায়।
তাদের সব নাম এখনো মনের পাতায় তোমার আমার তবে কিনা সেটি বলা বারণ কারন সেটাই কোড অফ ডিসেন্সি বা মোড অফ ফ্রেন্ডশিপ।
আমাদের কালে প্রেমে বিস্তর আবেগ ছিল। কারণ যোগাযোগব্যবস্থা ছিল দূর্বল আর ভাবনার জগৎ ছিল বিশাল। প্রকাশের মাধ্যম ছিল কম। সেই আদি অকৃত্রিম পত্র।
দান প্রতিদান ছিল সামান্য কারন পকেট ছিল গড়ের মাঠ।তবু তার মধ্যেও ছিল ইচ্ছে নদীতে বান।
মনে আছে আমার এক কিশোর বন্ধু পুরী বেড়াতে গিয়ে আমাকে একটি কোনার্কের রথের চাকা এনে দিয়েছিল। বুঝতাম তার কাছে আমি বিশেষ কিন্তু আমি তাকে সেভাবে দেখিনি কোন দিন। সেই বন্ধুটি আজ আর এই পৃথিবীতে নেই কিন্তু তার দেওয়া সেই উপ হার টি আজ ও আমার বাবার বাড়ির সোকেসে সাজান আছে তেমনই।।।
প র্ব-৫
সেদিন টিফিন পিরিয়ডে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মেম্বর সিপ করাবার জন্য সেই ঘিয়ে শার্ট এলো আমার কাছে।
কি নাম?
তনিমা গাঙ্গুলী। কিন্তু আমি রাজনীতি পছন্দ করি না।
কেন?প্রত্যেক শিক্ষিত মানুষের একটা রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকা উচিত।
আমি এই কথাটা সমর্থন করি না।রাজনীতির বাইরেও মানুষের অনেক কিছু করার আছে।.........
কি নাম?
তনিমা গাঙ্গুলী। কিন্তু আমি রাজনীতি পছন্দ করি না।
কেন?প্রত্যেক শিক্ষিত মানুষের একটা রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকা উচিত।
আমি এই কথাটা সমর্থন করি না।রাজনীতির বাইরেও মানুষের অনেক কিছু করার আছে।.........
ছন্দ প ত ন! ছন্দ প ত ন!
এমন টাই হয়েছে।যত বার কথা হয়েছে। ততবারই তর্ক।কথা কাটাকাটি।
এমন টাই হয়েছে।যত বার কথা হয়েছে। ততবারই তর্ক।কথা কাটাকাটি।
যা বলতে চেয়েছি তা কোনদিন বলা হয়নি।যা শুনতে চেয়েছি তাও শোনা হয়নি।
আমার এক প্রিয় বান্ধবী মিল করাবার অক্ষম চেষ্টা করে গেছে বার বার।
আমার কন্যাটি আমার জীবনের এই প্রনয়কাহিনী শুনে আমাকে দারুন একটি উপদেশ দিয়েছে সম্প্রতি।
"রিলেশান সিপ ইজ নাথিং বাট এ টলারেন্স মা। হোয়াই ইউ ওয়ার সো ফুলিস টু স্পেন্ড ইয়োর গোল্ডেন টাইম টু চেজ দ্যাট ইনসেনসিটিভ পার্সন?"
সাতচল্লিশ বছরের ছেলেমানুষি বুদ্ধি নিয়ে চেয়ে থাকি বাইশ বছরের অভিজ্ঞ কিশোরীর দিকে।
কত বদলেছে দিনকাল। বদলেছে মানসিকতা। আমরা এখনো প্রেমকে বড় রঙিন ভাবি। এরা বড় বাস্তববাদী।
জানিনা কারা ঠিক আর কারা ভুল।
জানিনা কারা ঠিক আর কারা ভুল।
মোদ্দা কথা আমাদের ইয়ারে গোনাগনতি দু একটি জুটি ছাড়া কেউ ই প্রেমের পরীক্ষায় পাস করে আজীবন দাম্পত্যে আডমিশন নেয় নি।
কাল বলবো সে রকম ই একটি সফল জুটির গ ল্প।।।
প র্ব-৬
পদ্মলোচন পদ্মলোচন তোমার গালে টোল।
তোমার প্রেমের ইকুয়েশনে গোলে হরিবোল।
তোমার প্রেমের ইকুয়েশনে গোলে হরিবোল।
পদ্মলোচন পদ্মলোচন হেব্বি তোমার চাল।
কলেজ জুড়ে রমনীকুল হচ্ছে যে বেহাল।।
কলেজ জুড়ে রমনীকুল হচ্ছে যে বেহাল।।
পদ্মলোচন পদ্মলোচন করলে ভালোই তাক।
নাচছে আমার প্রিয়সখী ঝিঞ্চা চিকুর চাক।।
নাচছে আমার প্রিয়সখী ঝিঞ্চা চিকুর চাক।।
পদ্মলোচন আমার বান্ধবীর প্রেমিক।তৎকালীন কলেজসমাজে সে যখন তার বাহারী রঙ চশমাটি এঁটে কলেজের গাড়িবারান্দায় ঘ্যাঁচাং করে তার বাইকটি থামাতো তখন বহু মেয়ের কম্পমান হৃদয় ই বক্ষকোটরে প্রবল বেগে লম্ফমান হতো।
তবে আমি কোন দিন তার প্রেমে পড়িনি কারন আমার হাতে তো বাঁধা ছিল সেই ঘিয়ে শার্টের অমোঘ কবচকুন্ডল। যা আমাকে চিরকাল সকল প্রার্থির নীরব সরব প্রার্থনা থেকে দুরে রেখেছে।
তোমরা হয়ত ভাবছো ধান ভানতে শিবের গীত কেন হে বাপু?
দেখো হে সেকথা নয়।তবে কি না অন্ধকারকে দেখাতে হলে তো একটু আলোর অবতারনার প্রয়োজন হয়েই পড়ে। তোমার পাশের লোক টির পাত থেকে দুগাল না খেলে কি করে বুঝবে যে তোমার ভাতটি বেজায় আলুনি।
আর পাঁচ জনের সাথে তুলনা করে বুঝেছি যে,
আমার প্রেমভাগ্যে চিরকেলে শনির দশা।তা সেই ষোলোতে ঘিয়ে শার্টে শুরু হয়ে ছেচল্লিশে শ্মশান ঘাটে সমাপ্ত হয়েছে।
আমার প্রেমভাগ্যে চিরকেলে শনির দশা।তা সেই ষোলোতে ঘিয়ে শার্টে শুরু হয়ে ছেচল্লিশে শ্মশান ঘাটে সমাপ্ত হয়েছে।
এতে অবশ্য কারো কোন দায়িত্ব বর্তায় না।কারন ভিড়বাসে মালের দায়িত্ব যেমন আরোহীর তেমনি এই বিশাল জনসমুদ্রে আপন আপন কপালের দায়িত্ব সেই দেহধারীর।
তা বলে কি প্রার্থি কেউ ছিল না? হাজারজন ছিল। কিন্তু আমার তাতে ভ্রুক্ষেপ ছিল না কোনদিন।কারন আমি সেই একবগগা ষাঁড় যে বেজায় গোঁ ধরে একদিকেই তাগ করে আছে। লক্ষ্য হতে নড়াবার যো টি নেই।
তাই সারা কলেজ জীবনে আমার মোক্ষই ছিল দৈনন্দিনের কলেজপাঠ আর সেই ঘিয়ে শার্ট।
তেমন বিখ্যাত ও ছিলাম না কোন দিন।ছিলাম শান্ত,লাজুক স্বভাবের।তবে কৌতুকপ্রিয়তা স্বভাবটি ছিল বরাবরই।
আর সেই কৌতুকপ্রিয়তার বশেই করে ফেলেছিলাম একদিন একটি ভারি অন্যায় কাজ।
আজ পর্যন্ত কেউই জানে না সেটি। এমন কি আমার কাছের বান্ধবীরাও না।
সে ছিল এক রম্য কিশোর।কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের শেষে। আমার প্রিয় বান্ধবীটি প্রবল জ্বরে শয্যাশায়ী বেশ কিছুদিন। তাই একাই ঢুকছি কলেজে।
সে হঠাৎ এসে আমাকে ডেকে আমার হাতে একটি পত্র দিল।
ঘটনার আকস্মিকতায় আমি একটু বিস্মিত।
বললো পড়ে জানিও মতামত।
বললাম ঠিক আছে তিনটের সময় প্রিন্সিপাল বাংলোর সামনে এসো।
অফ পিরিয়ডে কমন রুমে বসে পড়লাম সেই চিঠি।একজন বিজ্ঞানের ছাত্র যে এত সুন্দর বাংলা লিখতে পারে সে চিঠি না পড়লে অনুধাবন করা যাবে না।এক অপরূপ সুন্দর কাব্যগাথা।
প্রিন্সিপ্যাল বাংলোর নির্জন বারান্দায় দেখা হল।
বললাম, তুমি লিখেছ এই চিঠি।
হ্যাঁ।
কেন?
তোমাকে ভালবাসি তাই।
আমি তখন মনে প্রানে সেই ঘিয়ে শার্টের। নিজের কাছেই নিজে প্রেমের চরম পরীক্ষা দেবার নেশায় অন্যের অনুভবের সুক্ষতা আমার কাছে তখন তুচ্ছ।
তদুপরি এক নিষ্ঠুর দুর্বুদ্ধি ভর করলো মাথায়।
তদুপরি এক নিষ্ঠুর দুর্বুদ্ধি ভর করলো মাথায়।
বললাম, জানো কি শাস্তি হতে পারে এর?
কি?
কান ধরে তিনবার ওঠবোস।
তুমি বললে তাও পারি।
তুমি তো আমার থেকে সিনিয়র। লজ্জা করবে না আমার কাছে?
তোমার কাছে কোন ইগো নেই আমার।
কই করে দেখাও তো তাহলে।
আমাকে অবাক করে দিয়ে অম্লানবদনে তিনবার কান ধরে ওঠবোস করে বললো,হয়েছে?
আজো মনে আছে সেই উজ্জ্বল চোখ,কোঁকড়ানো চুল আরক্ত মুখখানি।
বল লাম, আর কোন দিন ব ল তে এসো না এসব কথা।
এই বলে তার লেখা চিঠিটি তার হাতে সটান ধরিয়ে দিয়ে বিজয় গর্বে চলে এলাম অকুস্থল থেকে।
তারপর আর কোন দিন দেখা হয়নি তার সাথে।
সেদিন বুঝিনি কাঁচ পাবার নেশায় হীরে ফেলে চলে এসেছিলাম ধূলায়।
অনেকদিন পর ফেসবুকে খুঁজে পেয়ে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালাম। ভেবেছিলাম একসেপ্ট করবে না।
কিন্তু সেই স্বভাবসিদ্ধ বদান্যতায় বন্ধুত্ব গ্রহন করে মেসেঞ্জারে লিখলো,ভালো আছো?
(শেষ প র্ব)
প্রায় আটবছর বাদে বাঁকুড়া গিয়েছিলাম গত ফেব্রুয়ারিতে।প্রিয় বান্ধবীর সাথে কলেজে গেলাম সাতাশ বছর বাদে।
কলেজে ঢুকেই কেমন কিশোরী হয়ে গেলাম। হতে পারে স্থানীয় নই বলে, হতে পারে সেই যে ছেড়ে গেছি আর আসিনি বলে, হতে পারে আমি মাত্রাতিরিক্ত আবেগপ্রবণ বলে।
বান্ধবীর কাছে সেই ঘিয়ে শার্টের ফোন নম্বর ছিল।
সাতাশ বছরের এপার ওপার। ভেসে এল গলা তার।
বললাম,কি রে আমার জীবনে এত বড় একটা দূর্ঘটনা ঘটে গেল একবার খোঁজ নিলি না।আমার সব বন্ধুরাই খোঁজ নিয়েছিল। তোর কাছেও আশা করেছিলাম।
শুধু বললো, আমার উচিত ছিল বোধহয়।সত্যি ভুল হয়ে গেছে।
হা হা হা।সেই এক চাল, এক ভাষা, এক আত্মরক্ষাপরায়ণতা।
বললাম, আর আমি দেখ কেমন বদ্ধপাগল তাই তোকে এখনো মনে রেখে দিয়েছি।
আসলে এই ইলেভেন সায়েন্সের রুমটার ই গুন বোধহয় কেমন নস্টালজিক হয়ে পড়লাম এখানে ঢুকেই।
বলল, রাখ একটু ব্যস্ত আছি। রাতে ফোন করছি তোকে।
কি ভীষন সশব্দে ভেঙে গেল এতদিনের যত্নে জমিয়ে রাখা আমার সেই রত্নভাণ্ডার। কী ভীষন উত্তাল ঢেউয়ে ধুয়েমুছে গেল সব।
এই মানবিকতাহীন ছেলেটিকে আমি আমার কৈশোর প্রেমের মর্যাদা দিয়ে এসেছি এতদিন।আমি তো ভারী বোকা।
বন্ধু মানে তো একটু সুখ দু:খে পাশে থাকা।একটু মনের কথা বোঝা এর চেয়ে বেশি আর কি।
জীবনের অনেকদিন তো হাঁটা হয়ে গেল আর কদ্দিন?এর চেয়ে বেশি কি বা দাবি?
এরা নিজেকে মানবিক বলে দাবি করে অথচ বন্ধুর ব্যথার দিনে উদ্বেলিত হবার সৌজন্যটুকুও নেই।
সেদিন রাতে ফোন এলো।
বলল, বল কি বলছিলি। তোর সাথে সময় করে দেখা করব একদিন।
বললাম, না রে থাক। আমার এই আবেগপ্রবণ ছেলেমানুষীটা প্লিজ ভুলে যাস কেমন। ভালো থাকিস।
শুনেছি চার্চে কনফেসন বক্সে দাঁড়িয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলে যীশু সব অপরাধ ক্ষমা করেন।
সেদিন প্রিন্সিপ্যাল বাংলোর ঘটনার সাক্ষী কেউ ছিল না। কিন্তু আজ কলেজের গাড়ি বারান্দায় দাঁড়িয়ে তোমাদের সবার সামনে আমি তিন তিরিক্ষে নয় বার কান ধরে ওঠবোস করবো কারন তার কাছেই তো শিখেছি সত্যিকারের ভালোবাসায় কোন ইগো থাকে না।
বন্ধু মানে তোমার বেদনা আবৃত করা।বাঁচার প্রেরণা যোগানো।
না, আমার জীবনে তথাকথিত প্রেম করা হয়নি কখনো।
আমি জীবনে কোনদিন কোন প্রেমপত্রও লিখিনি কাউকে।
আজ লিখবো আমার জীবনের প্রথম ও শেষ প্রেম পত্রখানি সেই রম্যকিশোর কে----------+++++
তোমার ভালবাসার কথা ভাবলে
বড় কান্না পায় আমার আজকাল
বড় কান্না পায় আমার আজকাল
আমি ভগবানকে দেখিনি কোনদিন
আমি তোমাকে দেখেছি।
আমি তোমাকে দেখেছি।
এত অপমান করে ফিরিয়ে দেবার পরও
আমার জীবনের ঘোরদূর্দিনে
আমার জীবনের ঘোরদূর্দিনে
কি অবলীলায় ফিরে এসে হাত
বাড়িয়ে দিয়েছিলে তুমি
বাড়িয়ে দিয়েছিলে তুমি
আমার জন্য অবহেলে শত কটুক্তি
পেরিয়ে এলে আবেগ আকুল রম্য কিশোর
পেরিয়ে এলে আবেগ আকুল রম্য কিশোর
দেখেছি কেমন আঁধার মুছিয়ে
দিতে পারে বাক্যের সস্নেহ পরশ।
দিতে পারে বাক্যের সস্নেহ পরশ।
এ সমাজ বোঝে না ব্যথা খোঁজে শুধু মলিনতা
সম্পর্কের ডানায় ডানায়।
সম্পর্কের ডানায় ডানায়।
তোমার আমার বলো তাতে কিবা এসে যায়
এযে বড় সুকঠিন আজীবন বন্ধুত্বের দায়
এযে বড় সুকঠিন আজীবন বন্ধুত্বের দায়
এসো শুধু ছুঁয়ে থাকি কান্নায় ধুয়ে রাখি
ব্যথানীল দুখানি হৃদয়।
ব্যথানীল দুখানি হৃদয়।
সারারাত শিশিরে ভেজাই নিজেকে পলে অনুপলে
আগামী জন্মের নব ভোরে তোমার শিঊলি হবো বলে।।।
আগামী জন্মের নব ভোরে তোমার শিঊলি হবো বলে।।।
(স মা প্ত)
অপূর্ব । অনেক কিছু শিখলাম ।
ReplyDeleteGolden memories
ReplyDelete