আমার সময়ে স্কুলের সঙ্গে কলেজের একবারই সরাসরি যোগাযোগ হয়েছিলো আমার বাবার মাধ্যমে। যতদূর মনে পড়ছে তখন আমি আট ক্লাসের ছাত্র। সালটা সম্ভবত ১৯৮০। স্কুলে তখন বাংলা পড়াতেন সমীরবাবু( বড় ), শৈলজাবাবু, সরোজবাবু, নবগৌরবাবু, রঞ্জিতবাবু। সেইসময় আমাদের বাংলা ক্লাস নিতেন বড় সমীরবাবু। উনি একটু রাগী ছিলেন। খুব ভালো পড়াতেন কিন্তু। স্যারের নতুনচটির বাড়িতে বার দুয়েক গেছি। তো স্যার কাজ থেকে অবসর নিলেন। জোড়াতালি দিয়ে ক্লাস চলতে লাগলো। তখন স্কুল থেকে বাবাকে আংশিক সময়ের জন্য নিয়োগ করা হয়। মনে পড়ছে বাবা দুপুরের দিকে আসতেন। টেবিলের উপর কলেজ ব্যাগটি রেখে কি পড়া হবে তা জেনে নিতেন। তারপর কয়েকজনকে দিয়ে জোরে জোরে পড়াতেন। শব্দার্থ, বিপরীত শব্দ বলে দিতেন। খুব সুন্দর করে বোঝাতেন। এভাবে প্রায় তিনমাস আমরা বাবার কাছে পড়েছি। আমি আর কখনও ক্লাসে বসে বাবার কাছে পড়িনি। প্রসঙ্গত জানাই যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করার পর বাবা প্রায় বছর দুয়েক হুগলি জেলার দুটি স্কুলে পড়িয়েছেন। যাইহোক তারপর আমাদের বাংলার নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলেন। সেই ইন্টারভিউও বিশেষজ্ঞ হিসাবে বাবা নিয়েছিলেন। ডঃ তৃপ্তি ভট্টাচার্য হলেন আমাদের নতুন বাংলা শিক্ষক। মনে আছে বাবা বাড়িতে তৃপ্তিবাবুর খুব প্রশংসা করেছিলেন। বলেছিলেন - দেখিস, তোদের খুব ভালো পড়াবেন ইনি। তা স্যার সত্যিই খুব ভালো পড়াতেন। লম্বা, অত্যন্ত গৌরবর্ণ, মুখশ্রী খুব সুন্দর, মাথার সামনেটায় টাক। সব মিলিয়ে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবিতে স্যারকে দারুণ লাগতো। তখন কি আর জানি স্যারের একমাত্র মেয়ে উষ্ণা আমার এতো প্রিয় বোন হয়ে উঠবে! উষ্ণা কলেজে আমার চেয়ে একবছর জুনিয়র। সাম্মানিক পদার্থবিদ্যার খুব উজ্জ্বল ছাত্রী। গানও গাইতো তখন। তারপর কলেজ থেকে বেরিয়ে কম্পিউটার, এম বি এ এসব করে খুব উঁচুদরের চাকরী করতো। চাকরীর সূত্রেই একবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মাথায় উঠে দারুণ স্টাইল দিয়ে ছবিও তুলেছিলো। এরই মধ্যে কলকাতার দক্ষিণীতে দারুণ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিখেছে সেই একরত্তি মেয়েটি। ওর গান তো তোমরা শুনেছো। বছর দেড়েক আগে আমাকে ফেসবুকে চরে বেড়াতে দেখে আবার নতুন করে আলাপ করলো। ওর দৌলতেই স্যারের সঙ্গে এতোবছর পরে আবার দূরভাষে কথা বলার সুযোগ হোলো আমার। আমার এই বোনটি আবার কর্মসূত্রে খাদ্য বিশেষজ্ঞও বটে। আর সবাইকার মুস্কিল-আসান।
স্কুলে উপরের দিকে পড়ার সময় মাঝে মাঝে কলেজ মাঠে খেলা দেখতে আসতাম। তখন ক্রিকেট খেলা দেখতে লোক ভেঙে পড়তো। পিপিদা, তাপসদা, রাজাদা, পাগুদা ( আমার পাগুকাকা ) --- এমন কতো নাম। পিপিদা ছিলো তাড়ু ব্যাটসম্যান। দুম দাড়াক্কা ব্যাট চালাতো বলে ওই উপাধি পেয়েছিলো। পাগুকাকা কোনো একটা দলের ক্যাপ্টেন। দারুণ স্পিন বল করতো। আর রাজাদা ছিলো দৈত্যাকার। খুব জোরে বল করতো। চারপাশের গাছগুলো লোকে ভর্তি হয়ে যেতো। ব্রাউন ছাত্রাবাসের মাথায় আবাসিকরা পা ঝুলিয়ে বসে খেলা দেখতো। সে এক বিশাল উত্তেজনা।।
পাগু ওরফে তুষারকাকার বাড়ি ছিলো স্কুলডাঙায় আমাদের বাড়ির উল্টোদিকে হরিদাসবাবুর বাড়ির লাগোয়া। ওই বাড়ির পিছনের দিকে ভাড়া থাকতো আমার স্কুলের আর এক অভিন্নহৃদয় বন্ধু মুকুল। সেইসূত্রে ও বাড়িতে আমার অবাধ যাতায়াত। আমাদের বাড়ির উল্টোদিকের ছোটো মাঠটাতে আমাদের জমজমাট ক্রিকেট খেলা চলতো। পাগুকাকা প্রায়ই আমাদের সঙ্গে খেলতো। ওর স্পিনের ঘুর্ণিতে আমরা জেরবার হয়ে যেতাম। পাগুকাকার ভাইঝি কুহুদি তখন কলেজের ছাত্রী। আর রকেট গলির ভিতরে বাঁকুড়া-বিখ্যাত নীলুবাবুর বাড়ির উল্টোদিকে ছিলো তাপসদা, রাজাদা - এই দুই ভাই এর বাড়ি। ওদের ভাগ্না সুমনজিতের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় শুদ্ধশীলের মাধ্যমে বন্ধুত্ব হোলো। শুদ্ধশীলের বাবা রামানন্দকাকু তখন তাপসদাদের পাশেই বাড়ি করেছেন। এই সুমনজিৎ পরে কলেজে সাম্মানিক অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হোলো। জুয়েল একখানা। ওর কথা পরে বলবো।
( আবার আসিবো ফিরে )
স্কুলে উপরের দিকে পড়ার সময় মাঝে মাঝে কলেজ মাঠে খেলা দেখতে আসতাম। তখন ক্রিকেট খেলা দেখতে লোক ভেঙে পড়তো। পিপিদা, তাপসদা, রাজাদা, পাগুদা ( আমার পাগুকাকা ) --- এমন কতো নাম। পিপিদা ছিলো তাড়ু ব্যাটসম্যান। দুম দাড়াক্কা ব্যাট চালাতো বলে ওই উপাধি পেয়েছিলো। পাগুকাকা কোনো একটা দলের ক্যাপ্টেন। দারুণ স্পিন বল করতো। আর রাজাদা ছিলো দৈত্যাকার। খুব জোরে বল করতো। চারপাশের গাছগুলো লোকে ভর্তি হয়ে যেতো। ব্রাউন ছাত্রাবাসের মাথায় আবাসিকরা পা ঝুলিয়ে বসে খেলা দেখতো। সে এক বিশাল উত্তেজনা।।
পাগু ওরফে তুষারকাকার বাড়ি ছিলো স্কুলডাঙায় আমাদের বাড়ির উল্টোদিকে হরিদাসবাবুর বাড়ির লাগোয়া। ওই বাড়ির পিছনের দিকে ভাড়া থাকতো আমার স্কুলের আর এক অভিন্নহৃদয় বন্ধু মুকুল। সেইসূত্রে ও বাড়িতে আমার অবাধ যাতায়াত। আমাদের বাড়ির উল্টোদিকের ছোটো মাঠটাতে আমাদের জমজমাট ক্রিকেট খেলা চলতো। পাগুকাকা প্রায়ই আমাদের সঙ্গে খেলতো। ওর স্পিনের ঘুর্ণিতে আমরা জেরবার হয়ে যেতাম। পাগুকাকার ভাইঝি কুহুদি তখন কলেজের ছাত্রী। আর রকেট গলির ভিতরে বাঁকুড়া-বিখ্যাত নীলুবাবুর বাড়ির উল্টোদিকে ছিলো তাপসদা, রাজাদা - এই দুই ভাই এর বাড়ি। ওদের ভাগ্না সুমনজিতের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় শুদ্ধশীলের মাধ্যমে বন্ধুত্ব হোলো। শুদ্ধশীলের বাবা রামানন্দকাকু তখন তাপসদাদের পাশেই বাড়ি করেছেন। এই সুমনজিৎ পরে কলেজে সাম্মানিক অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হোলো। জুয়েল একখানা। ওর কথা পরে বলবো।
( আবার আসিবো ফিরে )
No comments:
Post a Comment