Tuesday, August 23, 2016

বিদেশি মুল্লুকে দেশি অবতার : দীপ্তজ্যোতি মৈত্র

পেথথম বার মার্কীন মুল্লুক যখন গেলাম, সেটা ছিল কুড়ি ঘন্টার রাস্তা...থুড়ি আকাশ!
মাঝ পথে লন্ডন এ তিন ঘন্টা র লে-ওভার(পা ছড়ানো র বিরতি),
সঙ্গে সহযাত্রী আমাদের মুম্বাই আপিস এর দুই সহকর্মী.... রাজীব আর প্রবাল!
রাজীব ভাটনগর বেশ দুঁদে কর্পোরেট খিলাড়ী, আমাদের বোমবাই কর্পোরেট আপিস এর অলিন্দে সর্বত্র তার অবাধ গতিবিধি.
আর প্রবাল মল হল আধা আকাদেমিক আর আধা কর্পোরেট এর হজবরল.ওর পূর্বজ নাকি নেপাল এর রাজ পরিবার এর সঙ্গে সেই...... কে যেন হয় গঙ্গারাম এর ....টাইপ এর রিলেশান। তাই আর কিছু থাকুক না থাকুক, বেশ একটা পেল্লাই সাইজ এর ইগো আছে।
আমরা চলেছি বিন্নেস্ ভিসা্ নিয়ে .....এই একটু মিটিং টিটিং কত্তে আর কি.... এইচ ওয়ান বা এল ওয়ান নয়.... একটা রুম এ চার জন থেকে মুড়ি আর ছাতু খেয়ে ডলার সেভ করে একটা ল্যাপটপ আর দু বোতোল জনি ওয়াকার নিয়ে ঘর এ ফেরার পাব্লিক নয়।
কম্পানী বিন্নেস ক্লাস টিকিট দেয় নি,
তাই রাজা মশাই এর মেজাজ গরম!
আমাদের টিকিট হল গিয়ে মহারাজা এয়ারলাইন মানে দেশি এয়ার ইন্ডিয়া র ফ্লাইট!
আমাদের সীট্ মিললো প্লেন এর ডানা র কাছে. কাবিন ক্রু দের কিউবিকল্ এর পাসে.... বেশ মোটাসোটা গোলগাল টাক মাথা এক কাকু কাকু দেখতে ক্যাবিন ক্রু.... তার সঙ্গে তিন জন মাসিমা পিসিমা এয়ার হস্টেস....একদম খেnto পিসির দিদি সাশুড়ির বোন!
বোরিং.... বোরিং....
এই রে... কেলো করেছে.... রাত্তির দুটো বাজে !
ঠিক আছে, বাকি গল্প কাল বলব!
পার্ট টু:
রাত্তির আড়াইটে র ফ্লাইট... ঘুম এর ত দফা অলরেডি রফা. যাই হোক সেই মাসি পিসি টাইপ বিমান বালিকা রা কিছু খাদ্দ্য-মদ্দ্য পরিবেশন করতেই একটু স্বস্তি. 
বিমান ভরতি আমেদাবাদ-সুরাত-ভদোদরা র জিগনেস্-ভাই আর রুপাল-বেন..... কেম ছো? সু ছে সেরে ততোক্ষন এ প্লাস্টিক এর প্যাকেট খুলে থেপলা আর ফাফরা র বান্ডিল বার করে ফেলেছে... আচার এর প্যাকেট হাতে হাতে রো বত্তিরিশ থেকে রো সাতচল্লিশ পরযন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে.
এটা এয়ার ইন্ডিয়া র ৭৪৭ জাম্বো জেট এর পেট এর খোল না বোমবাই এর কলবাদেভি এলাকা র এক এঁদো গলি বোঝা মুশকিল হচ্ছে.
আমাদের নেপালী রাজামশাই এর ফের মেজাজ গরম � মাত্তোর দু পাত্তোর মদ দিয়ছিলো.... থেপলা-ফাফরা র সুঘ্রাণ এ রাজামশাই এর সেই দু পাত্তোরি মৌতাত চটকে চিত্তির.�
ইতিমোধ্যে ঘড়ি তে সকাল পাঁচটা.... পেছন দিকের কোনো রো থেকে হেতাল্ বেন দীপল্ আর রুপল্ বেন দের সাথে নিয়ে "কিসন্ ভগবান" এর সংকিরতন চালু করলেন.... তাইতে গলা মেলাতে মেলাতে আমাদের দুই রো পেছনে মোটা-ভাই তার ক্যাবিন লাগেজ থেকে এক জোড়া খঞ্জনি বের করে বাজাতে সুরু করলেন� সে এক ভয়ানক শব্দোকল্পোদ্রুম!
আমাদের রো তেই আইল এর ওপাশ এর সিট এ দেখলাম এক ফিরাংগ দম্পতি কানে ইয়ার ফোন আর চোখে আই মাস্ক লাগিয়ে সেই দুর্নিবার ভক্তি প্লাবন থেকে উদ্ধার পাবার ব্যার্থ
চেসটা তে ব্যাস্ত! বেচারা! জীবনে আর কোনো দিন এয়ার ইন্ডিয়া র ফ্লাইট এ চড়বে না এটা সুনিসচ্চিত!
কাকু মার্কা সেই ক্যাবিন ক্রু কে জিজ্ঞেস করলাম... এদের থামানো যায় না? এক করুন হাঁসি হেঁসে বল্লেন না দাদা.... আমাদের ফরটি পারসেন্ট প্যাসেঞ্জার হলো গিয়ে গুজু-ভাই'স.... আর তবেই বুঝুন আমাদের অবস্থা! কুড়ি ঘন্টা এই সব সইতে সইতে কি হাল হয়! এই তো সবে শুরু... আরো কতো কিছু হবে এখনো! �
আমি ক্রু দাদা কে বল্লাম.... জাস্ট বিটুইন ইউ আন্ড মি..... আমি পাগল হয়ে গেলে কিন্তু কামড়ে দিতে পারি... তুমি চুপিচুপি আমাকে আর দুটো হোয়াইট ওয়াইন দাও.... আমি চুপটি করে ঘুমিয়ে নেই.... �

No comments:

Post a Comment