Tuesday, August 23, 2016

বিশ্বমিত্র জহরদা : রূপক সামন্ত

কাল থেকে খুব জহরদার কথা মনে পড়ছে। অজস্র স্মৃতি নিয়ে আমি বয়ে চলেছি। সে তো এসবের ধার ধারতো না। তাই ই ফুড়ুৎ। সঙ্গের ছবিটা ১৯৮৬ সালের। কলেজ প্রদর্শনী শেষ হওয়ার পর গাড়িবান্দায় ক্লান্ত হয়ে বসে আছি দুজনে। ছবিটা তুলেছিলো জহরদার দাদা পার্থ সিং। বাঁকুড়ার যীশু / রুদ্র বোস সদ্য যুবা তুমি তখন অপাপবিদ্ধ চোখ আর রেশমি কোমল দাড়িতে তোমাকে যীশুর মতো লাগতো তোমার হাসিতে উছলে পড়তো আলো খদ্দরের পাঞ্জাবি পায়জামায় হেঁটে গেলে হৃদয় ছুঁয়ে যেতো মাতাল বসন্ত বাতাস এক তরুণ বিস্ময়-চোখে দেখতো তোমাকে সুযোগ পেলেই দিন নেই সুলুক নেই অষ্টপ্রহর ছায়াসঙ্গী তোমার জেনে নিতো জীবন কাকে বলে কেমন করে ভালোবাসতে হয় মানুষকে কারণে অকারণে ছুঁয়ে দেখতো তোমাকে- মানুষ তো! না কি মর্ত্যের ঈশ্বর! কলেজ মোড়ের আড্ডায় গেলাসের গরম চা এ ছাতিমতলার আলোচনায় ব্রাউন নাইট স্কুলে রক্তদানে স্লোগানে মিছিলে টিটি রুমে, ক্যান্টিনে কিংবা ইউনিয়নরুমের বিতর্কে সেই নাছোড়বান্দা তরুণ তোমার বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা সব পাখি ঘুমিয়ে পড়লে কান্তিদার বিচিত্র আড্ডায় ক্লান্তি ভুলে তোমার সঙ্গী সেও রাত বারো বেজে যায়, তবু হোস্টেলে ফেরার নেই কোনো তাগিদ কেনই বা ফিরবে বলো ছেড়ে জীবনের অমৃত আস্বাদ! রাত গভীর হলে রেললাইন টপকে চড়াই পথে বিড়ির টিপটিপ আলোয় ঘরে ফেরা, নিতান্ত ফিরতে হয় বলে গান ছড়িয়ে পড়ে জোছনা-প্রান্তরে- মোর মন যে গায় ঘরে ফেরার সুর তারপর ভাগাভাগির রুটিতে মরে যাওয়া খিদে মিটিয়ে নির্ভেজাল ঘুম নামতো চোখে সেসব দিন আজ কোন স্বপনের পার সবাই ব্যস্ত দেখি নিজ নিজ কুম্ভীপাকে সেই তরুণও পৌঢ় আজ, পলিতকেশ ফাগুনের শিমূলে পলাশে অশোকে তবু আনমনে খুঁজে ফেরে তোমাকে- বাঁকুড়ার যীশু কে জীবনের শেষ পাঠ বাকি রয়ে গ্যাছে শেখাবে সময় হলে- কথা ছিল তাই পেরিয়ে অগুন্তি অমাবস্যা গতরখাকি আরও কত যে বাকি হয় নি কি সময় এখনও!!

১৪/৪/১৬ ১ লা বৈশাখ

No comments:

Post a Comment